১. অনেক হলো... এবার অদলবদল
যেমন, রূপ পরিবর্তন
দেহের টানে খিলখিল হাসি, চোখে-মুখে
প্রকৃত সত্য উগ্র কালো-
শোকদুঃখ একশোতে একশ আসছে-
অবশেষে
মরি আর বাঁচি দূরে ফুটে দেখাদেখি
একাংশ, দিন কাটে না- আর কত?
২.
তুমি জলের বুড়বুড়ি শব্দে স্মৃতি দেখছো গুনে
আমি ধানঝাড়া গন্ধে ছুটছি মিহিন বাতাসে
এই শহরে খোলা জায়গা নেই
শুকনো পাতার মতো হাঁটি ফুটপাতে
পার্কের বেঞ্চ...সমস্ত জায়গা জুড়ে মশকরা করে
কী হবে জানি না; মাথা ঠুকছি প্রত্যেক পাথরে
৩.
তুমি উর্ধ্বমুখী হলে তড়িৎস্পর্শে; ঘূর্ণি হাওয়ায়
তার আগে লোভ লিপ্সা হাঁপাতে হাঁপাতে রবিশস্য
ক্ষেতে চলে গেছে চৌষট্টি কদম হেঁটে, নিয়ম ভেঙে
কাদাপ্যাঁকে হাঁটো দেখবে তোমার দু-পায়ের ফাঁকে
গড়াগড়ি কাদাজলের অসংখ্য ফুটি
৪.
হাত ফসকালে বুক ধকধক করে;
তারপর...
দু’খানা হাতের স্পেসে তোমার
দেড়হাত ব্রেকশো
কীভাবে কী হয়! এ দুশ্চিন্তায় আমি-
তারচে’ আধহাত ছোট
হাত না-ছুঁলে রঙচঙা দশনখ সন্দেহে ফুটে
অনেক হলো... বলতে পারো এমনই হরমামেশা ঘটে
৫.
অনেক জল গড়ালো ঠোঁটে নাওনি খুঁটে
ক্লান্তি দোষে বসে আছো পাশাপাশি
বলা যায়; জলপূর্ণ কলসে জেগেছো
জলের তাড়ায়; কার ইশারায়?
আশ্বাস পেতে পারো ঘোমটা খুলো বাঁশবনে
দেখবে জীবনগাঁথা বাঁশের জোড়ায় জোড়ায়
৬.
আমারও সংকোচ ছিল কুমারী পর্দায়
এই নিঃসঙ্গ বাঁশপাতাবনে, বর্ণেলা হাওয়ায়
কারা ছাই রেখে প্রাণ দিয়ে যায়, একা বসে ভাবে
তরুণ কুমার...তুমি রেফারেন্স খুঁজো না; প্লীজ!
লজ্জাশীলা
অ্যাকোরিয়াম ভরে রাখবো তোমার জন্য দমকা হাওয়া
৭.
তোমাকে না-বলে ফিরেছি একা
এই সুযোগে জেনেছি কৃতকর্মের ফল
এক্কা-দুক্কা
বুকে আগলে রাখো অংশীদার হাত
ক্ষমা করো আগে- পরে যত অনাঘাত
লুকিয়ে রাখো আঁচল ছায়ায় সারাদিন রাত
সময় ফিরে আসে রাস্তার ধারে; হাহাকারে
কিছুই বলতে পারি না তোমারে
৮.
পরে জেনেছি ওনাদের ডাকে চলে গেলে
ক্রমে ক্রমে শিখেছি ভালো থাকা ভালো
ত্রিধারা জলে
জেনেশুনে যেমন খুলে যায় ঋণ
চলে যাবার সময় থমকে দাঁড়ায়-
তোমার চোখ, নাক, মুখ; অর্ধেক কান
আমি দেবো প্রণাম- যাঁরা দূরে হেঁটে যান
৯.
পথের দূরত্ব চেপে ধরার ক্ষমতা নেই
রান্না ঘরে ঘষা-মাজা করি; কাপ-পিরিছ
জগ-গ্লাস, গ্যাসের চুলা, বর্তনে খুঁটি
ভাতের দানা, ক্ষমতাসত্ত্বেও যেন চূর্ণদানা
কিন্তু অক্ষমতা বলতে পারো না
অভিশাপ যত মাথা পেতে নেবো
নিয়তির দোষ দেব না
যদি অন্য কোনো ছুঁতোয় থেঁতলে ওঠে
দেহ শীর্ণপাতা
হয়ত বা এমনি আমি- এমনি আমার বিমর্ষতা
১০.
এসবই সর্বনাশের কথা, আহাম্মক! বলে
দিনের বেলা, পিচরাস্তায় হেলেদোলে চলে
উন্মাদ মহিলা
এসব নিয়ে ভাবি না; তাই ভাবনা যেমন
করে উড়ে সন্ধ্যায় পুড়ে- তাও কি বলা যাবে
সান্ত্বনা
বৃষ্টির দিনে ঘোলাজলে ঢুলছে স্মৃতি-কল্পনা
জলের তেষ্টায় একা হয়ে যাই কেউ জানে না
আজ তবে চক্রাকারে ঘুরুক দেহের অক্ষত বেদনা
১১.
হাসলে হৃদপিণ্ড সতেজ থাকে
ধানের গোছার মতন হেলেদুলে পড়ে
কাঁদলে দুঃখ কমে, হালকা থাকে মন
তোমার হাসি-কান্না কারণ ছাড়াই উঁকিঝুঁকি
দেয় যখন তখন। তাই ঝেড়েমুছে কান্নাগুলো
রুমালে বসাই, জলছাড়া হাসির টোল খেয়ে নেই
তুমি কাঁদলে গলা অব্দি জল খিলখিলে হাসে;
যদি হাসো তার নামে প্রণাম দেবো এবার
কুমারী পুজোয় যতটুকু জেনেছি দু’জনের বিশ্বাসে
১২.
ঘুরার শব্দে কখনো পেছন ফিরে তাকাইনি
কেন তাকাইনি ঘূর্ণি-লাটিম জেনেছে—
আর কাউকে বলিনি
একখণ্ড বিশ্বাসে দেড়খণ্ড পথ হাঁটি
পা দেখেনি নুড়িপাথরের সাথে কীভাবে
উড়েছে ধুলো... হাঁটার শব্দ জমেছে জামার
পকেটে তখন; ... তোমার কথা মনেই আসেনি
জুতার শব্দ হেঁটেছে পায়ে পায়ে
তাকে কিচ্ছু বলিনি
১৩.
যা দেখি ভালো লাগে না কিচ্ছু;
যেমন আছি বসে চুপিসারে
জটাফুলের ভেতর আটকে গেছে বর্ষা...
ফের বৃষ্টি এলে তুমি লুকাবে
কোথাকার জলে?
তোমার ভালোলাগা নিকোটিন; কালোধোঁয়া
বাস্তবতা; বাষ্পেভরা
১৪.
তুমি প্রাণ করো প্রকৃতি; গ্রহণ করো সভ্যতা
তাদের বাগানে চেরীফুলে হাসি; মন খুলে বলি
গ্রহণ করো আমায়, বীজফলের সাথে- একসাথে মিশি
সে কথা শুনে ফুল ঝরেছে দু-হাতে; তুমি না-চাইতে
তাই; মাটিতে গন্ধ নেই- নেই পাখপাখালির
খেঁচামেচি
একা বসে ভাবি, মাঝে মাঝে চাউল খুঁটে গুনি
না-ফোঁটা বাগানে আসতে হবে ফিরে
কচুপাতার ডাঁটা ছিঁড়ে
১৫.
অনেকে বলে, দেহভারে রাত্রি নিতে হয় খুলে
পাথরভাঙার শব্দে আজকাল, ভিজে না করতল
ঘৃণায় কমে আর বাড়ে, স্বপ্ন দেখি না আর-
বছর জুড়ে
জল শুধু ফুলে-ফেঁপে ওঠে
সরলতার ঠোঁটে
তোমার কি মনে হয় পাতা ছুঁলে কী হয়
দুঃখ যত পাতায় লিখে রাখি, খাতার পাতায়
বংশ রক্ষা করে সেও ডালে গেঁথে রয়
১৬.
গাছ কেটে বন উজার করা ভালো
টাকা আয় কত হলো
ওই গাছটিকে বলি পাতা কেন সবুজ হয়
গাছে গাছে কী হয়
গাছেরও প্রাণ আছে, আছে অক্সিজেনের সতেজ খনি
আমরা সবাই মিলে এসো গাছ কাটা বন্ধ করি একটুখানি
১৭.
পাতা ঝরে গেলে গাছও সতীত্ব হারায়
তোমরাই বলো- নারীর সতীত্ব থাকে
আরাধনায়
দেহফুল খসে পড়ে আগুনের দানায়
আর আশাগুলো ...
পুরুষের সতীত্ব তবে কোথায় লুকায়?
হেঁটে গেলে জানি ছায়াও পেছনে হাঁটে
হাঁটলে কেন শরীরে ঘামজল ফুটে
কেন শরীরে গন্ধও ছুটে-
১৮.
রাগ করে থেকো না বেশি দিন
রাগ করলে তোমার মুখটি ভারি
হয়ে যায়, মনে হয় সব লোকালয়হীন
পাশে ফেলে শরীর থেকে টেনে নেবো
সব প্রতিশোধ, ফেরাতে পারবে না সেদিন
পোশাকের খাপে।
১৯.
আমি ফিরবো অচিরেই তাই আঁকছি বুকের ভেতর
হৃদয়সংবাদ, সেদিন কষ্ট হলে ফিরিয়ে দেব না
তোমাকে, তীব্র রোদে কিংবা অলুক্ষণে হাওয়ায়
জানি সেদিন তুমি আসবে না, থাকবে না পাশাপাশি
এসব মনে হলে উর্ধ্বশ্বাসে কষ্ট জমে যায়—
বুকে জমে থাকে কাশি
মা-মাটি গাছলতাপার জন্য মন কাঁদে দিবানিশি
কেন তোমরা বারবার বলো এখন আমিও ভিনদেশী
No comments:
Post a Comment